![]() |
অনেক মানুষ আছেন যারা মোটা হওয়ার জন্য পাগল ছিলেন কিন্তু একটা সময় নিজের ভুল বুঝতে পারেন। কারণ একবার মোটা হয়ে গেলে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসা একটু কঠিন এবং কিছু ক্ষেত্রে অসম্ভব। মূলত সুস্থ থাকাটাই আসল জিনিস। আমাদের দৈনন্দিন জীবনে কিছু অতি তুচ্ছ ভুল অভ্যাস এবং অনিয়ম ক্রমাগত স্থুলতার কারণ হয়ে উঠছে।
২০১১ সালে ক্যালোরি কন্ট্রোল কাউন্সিল একটি জরিপ পরিচালনা করে। এতে দেখা গেছে যে, ১৭ শতাংশ আমেরিকান ওজন কমাতে দিনে একবারের বেশি খায় না। গবেষণায় দেখা গেছে যে, একবার খাবার না খাওয়া, বিশেষ করে সকালের নাস্তা শরীরে সঞ্চিত চর্বির পরিমাণ বৃদ্ধি করে। খাবার না খাওয়া বিপাকের মাত্রা কমায় এবং ক্ষুধা বাড়ায় যার কারণে আপনি নিজের অজান্তেই মোটা হচ্ছেন। আসুন বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক স্থুলতার কারণগুলি কি কি?
অতিরিক্ত টিভি দেখার ফল
টিভি দেখা স্থুলতার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ কারণ। টিভি দেখার সময় আমরা অলসভাবে বসে থাকি বা শুয়ে থাকি। এই সময়ে অন্যান্য কাজ করে শরীরের ক্যালোরি কমানো সম্ভব। যাইহোক, টিভি দেখার সময় বা ঘর পরিপাটি করার সময় ছোটখাটো হাতের কাজ করে ক্ষতির পরিমাণ কমানো সম্ভব।
আপনার প্লেটে কি খুব বেশি খাবার আছে
বড় প্লেটে একবারে অনেক খাবার নিলে আস্তে আস্তে খাওয়ার পরিমাণও বাড়তে থাকে। সুতরাং প্রথমেই প্লেটে কম খাবার নিন এবং পরে দরকার পড়লে সামান্য নিতে পারেন। প্লেটে বেশি খাবার নেয়া মোটা হওয়ার কারণ।
পর্যাপ্ত পানি পান করুন
নিয়মিত প্রচুর পানি পান করুন। খাওয়ার আগে ২ কাপ পানি পান করলে ক্ষুধা কমে যায়; ফলে খাবারের পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। অতিরিক্ত ক্ষুধা স্থুলতার কারণ।
খুব বেশি বা খুব কম ঘুমাবেন না
নিয়মিত ঘুম ৭-৮ ঘন্টা হওয়া উচিত। যদি কেউ প্রতিদিন ৫ ঘন্টার কম ঘুমায়, তাহলে তার পেটে একজন সাধারণ মানুষের তুলনায় ২.৫ শতাংশ বেশি চর্বি থাকে। যারা ৮ ঘন্টার বেশি ঘুমায় তাদের পেটে কম চর্বি জমে। এবং যারা কম ঘুমায় তাদের চর্বি বেশি থাকে, যা স্থুলতার একটি বড় কারণ।
দেরি না করে সময়মতো খান
যদি পেট খালি থাকে, তাহলে আপনার শরীরের অতিরিক্ত মেদ ব্যবহার করে রাতে ঘুমানোর সময় শরীরের মেদ কমাতে। তাই যারা রাত ৮ টার মধ্যে রাতের খাবার খায় তাদের শরীরের চর্বি অন্যদের তুলনায় কম থাকে। শরীরে চর্বি জমা মোটা হওয়ার কারণ।
নিয়মিত ওজন পরিমাপ করুন
আপনার নিজের ওজন সম্পর্কে ধারণা থাকা দরকার। ওজন বৃদ্ধিও স্থুলতার একটি প্রধান কারণ। বডিওয়েট বেশি হলে ওজন কমানোর ইচ্ছা সবার মনে জাগ্রত হয়। আবার ওজন নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করার সময় যদি কাঙ্ক্ষিত ওজন হ্রাস দেখা যায়, তাহলে এক ধরনের মানসিক শান্তি আসে।
কম চর্বিযুক্ত খাবার না বলুন
যখন আমরা খাবারের উপর ‘কম চর্বি’ লেখা দেখি, আমরা সবাই সানন্দে সেই খাবার গ্রহণ করি। এটা ঠিক যে এই খাবারের মধ্যে কিছু ক্যালরি কম। যাইহোক, এই খাবারগুলি ক্ষতিকারক চর্বির পরিবর্তে আঁশহীন খাদ্য উপাদান বহন করে। ফলস্বরূপ, এই খাবারগুলি দ্রুত হজম হয় এবং আপনার ক্ষুধা পুনরায় তৈরি করে যাতে আপনি আবার খেতে পারেন। খুব ঘন ঘন খাওয়া স্থুলতার কারণ হতে পারে।
দ্রুত খাওয়া স্থুলতার কারণ
খাওয়ার সময় আমাদের পেট ভরা আছে কিনা তা জানতে আমাদের মস্তিষ্ক ২০ মিনিট সময় নেয়। গবেষণায় দেখা গেছে যে, যারা আস্তে আস্তে খায় তারা রোজ খাওয়া লোকদের তুলনায় প্রতিদিন প্রায় ৬৬ কম ক্যালোরি গ্রহণ করে, যা বছরে আপনার ওজন ২০ পাউন্ড কমিয়ে দিতে পারে।
একজন পুষ্টিবিদ বা চিকিৎসকের পরামর্শ নিন
অনেকেই যা করতে চান তা করতে শুরু করেন বা বন্ধুর কাছ থেকে যা শুনেন তা করতে শুরু করেন। এগুলো প্রায়সময় স্থুলতার কারণ হতে পারে। তাই কোনো পদক্ষেপ নেওয়ার আগে ডাক্তারের পরামর্শ নিন।
মোটা হওয়ার কারণ শুধু অতিরিক্ত খাবার নয়
শুধু অতিরিক্ত বা অস্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া শরীরকে স্থূল করে না। এটা লাইপোয়েডিমার মতো রোগের কারণেও হতে পারে। এই ধরনের রোগে অসহ্য ব্যথা ও কষ্টের কারণে রোগীদের স্বাভাবিক জীবন ব্যাহত হয়।