![]() |
নিদ্রাহীনতা বা অনিদ্রাজনিত সমস্যার কারণ
আপনি কি রাতে ঘুম আসতে দেরী হওয়ায় আপনার মোবাইলে চ্যাট করেন বা সিনেমা দেখেন? ঘুম যদি আসেও তবে তা কি গভীর হয় না? আর এই দুটোই অনিদ্রা বা ইনসমনিয়ার লক্ষণ হতে পারে। এমন অনেক লোক আছে যারা এলার্জির কারণে ঘুমাতে পারে না, অথবা মাঝরাতে শ্বাস নিতে সমস্যা হয় এবং মাঝরাতে বুক ধড়ফড় করে ঘুম ভেঙে যায়৷। তাই অনিদ্রা এর সমস্যাকে কখনোই হালকাভাবে নেবেন না, চিকিৎসককে দেখান এবং নিশ্চিত হউন এটা অন্য কোনও রোগের লক্ষণ কিনা। মনে রাখবেন, ঠিকমতো ঘুম না হলে স্ট্রোকের ঝুঁকি বেড়ে যায়।
একজন সুস্থ ব্যক্তির স্বাস্থ্যের নিয়ন্ত্রকদের মধ্যে একটি হল ঘুম। একজন সুস্থ ও প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের প্রতিদিন অন্তত ৭ থেকে ৮ ঘণ্টা ঘুমের প্রয়োজন। দিনে ৬ ঘণ্টার কম ঘুমালে বিভিন্ন স্বাস্থ্য সমস্যা দেখা দিতে পারে। তবে বয়সের উপর নির্ভর করে শরীরে ঘুমের প্রয়োজন ভিন্ন হতে পারে।
প্ৰত্যেকটি মানুষের শারীরিক ও মানসিক সু-স্বাস্থ্যের জন্য পর্যাপ্ত ঘুমের কোনো বিকল্প নেই বললেই চলে। কিন্তু অনেকটাই আশ্চর্যের বিষয় হলো, বিশ্বের প্রায় ৩০ শতাংশ মানুষ নিদ্রাহীনতা বা অনিদ্রাজনিত সমস্যায় ভোগেন। এর মধ্যে বিশেষ একটি অংশ বা ৫০ শতাংশ বয়স্ক ও গর্ভবতী নারী পর্যাপ্ত ঘুম থেকে বঞ্চিত হয়। তবে ইদানীং দেখা যাচ্ছে অল্প বয়সী শিশু-কিশোররাও এ সমস্যায় বেশ ভুগছে।
মহামারী করোনার সময় এই সমস্যা অনেকটাই বেড়েছে। ঘুম শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে বাড়িয়ে তোলে ও মস্তিস্ক ঠান্ডা রাখে, শরীর থেকে ক্ষতিকর টক্সিন দূর করে এবং শরীরের কর্মক্ষমতা বাড়ায়। পরের দিনের কাজের জন্য পর্যাপ্ত শক্তি এবং কর্মক্ষমতা অনেকটাই নির্ভর করে একজন ব্যক্তির রাতে পর্যাপ্ত পরিমান ঘুমের উপর।
অনিদ্রা হলে কি করনীয়?
রাতে ঘুম আসছেনা বলে কখনোই ল্যাপটপ বা মোবাইল ফোনে বসবেন না, এতে ঘুমের সমস্যা আরও বেশি হবে। বরং আপনি বই পড়তে পারেন, মৃদু কণ্ঠে গান শুনতে সমস্যা নেই তবে গ্যাজেট থেকে দূরে থাকুন। ঘুমাতে যাওয়ার অন্তত দুই ঘণ্টা আগে বিভিন্ন ধরনের আলো থেকে নিজেকে দুরে রাখুন।
বিছানায় যাওয়ার জন্য একটি সময় নির্ধারণ করুন, এবং প্রতিদিন সেই সময় মেনে চলার চেষ্টা করুন। গবেষণায় দেখা গেছে যে, যেসব লোকেরা প্রতিদিন তাড়াতাড়ি ঘুমাতে যায় এবং ভোরবেলা তাড়াতাড়ি ঘুম থেকে ওঠে তারা সাধারণত ঘুমের সমস্যায় ভোগে না। মাঝে মাঝে প্রতিদিনের রুটিনের এদিক-ওদিক হতে পারে, কিন্তু নিয়ম ভাঙা অভ্যাসে পরিণত করা কঠিন।
ঘুমানোর অন্তত দুই ঘণ্টা আগে রাতের খাবার খান। এবং রাতে ভারী কিছু না খাওয়াই ভালো, বিশেষ করে যাদের অ্যাসিড রিফ্লাক্সের সমস্যা আছে, তারা হালকা খাবার খান।
রাতে ঘুমানোর আগে হালকা গরম পানিতে গোসল করতে পারেন এতে সাধারণত ভালো ঘুম হয়। আপনি এই সময়ে ল্যাভেন্ডার বডি ওয়াশ বা পারফিউমও ব্যবহার করতে পারেন, অনেকেই বিশ্বাস করেন যে ল্যাভেন্ডারের ঘ্রাণ রাতে ভালো ঘুম নিশ্চিত করে।
অনিদ্রা হলে যেগুলো করবেন না-
* ধূমপান করা থেকে দূরে থাকুন। ধূমপান করলে ঘুম আসতে দেরি হয়।
* দিনেরভেলা ঘুমানোর অভ্যাস করবেন না। এতে রাতেরভেলা ঘুমাতে দেরি হবে।
* অতিরিক্ত পরিমাণে কখনোই ক্যাফেইন গ্রহণ করবেন না। এতে ঘুমের সমস্যা বাড়তে থাকবে।
আরও পড়ুন - ৭ টি পানীয় পানের মাধ্যমে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ এর কোনো বিকল্প নেই কেনো?