![]() |
অনিয়মিত জীবনযাপনের ফলে কি হতে পারে
জীবনধারা প্রকারের কারণে, চিনি, চাপ, শরীরের বিভিন্ন অংশে ব্যথার মতো রোগ সহজেই স্থির হয়ে যায়। এই সমস্যাটি শুধু বয়স্কদের মধ্যেই নয় বরং আজকাল অল্প বয়স্কদের মধ্যেও দেখা যায়। একবার এই সমস্ত রোগ শরীরে স্থির হয়ে গেলে, এগুলি পুরোপুরি নিরাময় করা সম্ভব নয়। এই সমস্যা নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য কঠোর নিয়ম রয়েছে। তাই প্রত্যেককে সচেতন থাকতে হবে সময় থাকতে এবং নিয়ম অনুযায়ী খেতে- ব্যায়াম করতে হবে এবং প্রচুর পরিমাণে বিশুদ্ধ পানি পান করতে হবে। মনে রাখবেন সুস্বাস্থ্যই সকল সুখের মূল।
১/ শাকসবজি এবং ফল প্রতিদিন খাওয়া উচিত
ইংল্যান্ডের কিংস কলেজের বিখ্যাত গবেষক ড. মেগান রসির মতে, আপনার খাদ্য পরিবর্তন করার একমাত্র উপায় হল বেশি ফল এবং সবজি খাওয়া। অতএব, আপনার প্রতিদিন বিভিন্ন ধরণের শাকসবজি এবং ফল খাওয়া উচিত। প্রতি সপ্তাহে খেলে ত্রিশ ধরনের সবজি স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী।
২/ প্রতিদিন পুষ্টিকর খাবার খান
প্রতিদিন সুষম ও পুষ্টিকর খাবার খান। আপনার দৈনন্দিন খাদ্যে ফল এবং সবজি রাখুন। প্রতিদিন পালং শাক বা বাদাম জাতীয় খাবার খান। এই ধরনের খাবার মস্তিষ্ককে বাঁচিয়ে রাখতে সাহায্য করে।
৩/ প্রতিদিন নিয়মিত ব্যায়াম করুন
আপনি যদি ভালো হতে চান, তাহলে শারীরিক এবং মানসিকভাবে সুস্থ্য থাকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। প্রতিদিন নিয়মিত ব্যায়াম করলে শরীরে রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি পায় এবং হরমোন সঠিকভাবে নিৎসৃত হয়। যা শরীরকে হালকা ও শক্তিমান এবং মন ভালো রাখতে সাহায্য করে। নিয়মিত ব্যায়াম ডায়াবেটিস, হৃদরোগ, হাড়ের সমস্যা, ওজন বৃদ্ধি, এমনকি ক্যান্সার প্রতিরোধে সাহায্য করতে পারে। তাই প্রতিদিন ব্যায়াম করার অভ্যাস করুন।
৫/ প্রচুর পানি পান করুন
জীবন শব্দের জলের আরেক নাম আছে। আপনি কি জানেন যে একটি মানুষের শরীর 70-80% জল? তাই আপনি যদি সুস্থ্য থাকতে চান, তাহলে আপনাকে প্রতিদিন প্রচুর পরিমাণে পানি পান করতে হবে। কারণ পানি শুধু তৃষ্ণা মেটায় না, প্রতি ঘন্টায় এক গ্লাস পানি পান করলে শরীরের আর্দ্রতা বজায় থাকে এবং শরীরে জলের ঘাটতি পূরণ হয়। পান করার কিছু বিশেষ গুণ রয়েছে যা নিচে দেওয়া হল,
- অতিরিক্ত তাপ থেকে শরীরকে রক্ষা করে।
- শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।
- বদহজম, পানিশূন্যতা, মাথাব্যথা কমায়।
- ত্বকের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করে এবং নরম রাখে।
- শরীরের অতিরিক্ত ওজন কমাতে সাহায্য করে।
- শরীরের হাড় মজবুত ও ভালো রাখে।
প্রতিদিন পর্যাপ্ত পানি পান করলে আরও অনেক রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। তাই শরীরকে সুস্থ্য রাখতে আপনার পর্যাপ্ত পানি পান করতে হবে।
৬/ পর্যাপ্ত বিশ্রাম নিন এবং ঘুমান
সুস্থ্য থাকার জন্য আমাদের প্রতিদিন পর্যাপ্ত ঘুম পেতে হবে। আপনি প্রতিদিন একই সময়ে ঘুমানোর চেষ্টা করুন। আজ পাঁচটায় কিন্তু আগামীকাল সাতটায় এই ধরনের অনিয়মিত ঘুম স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। অনিয়মিত মাথা ঘোরা হৃদরোগ, ক্ষুধা হ্রাস, দুর্বলতা এবং শরীরের বিভিন্ন রোগের কারণ হতে পারে। বিশেষজ্ঞদের মতে, মানসিক এবং শারীরিকভাবে সুস্থ্য থাকার জন্য প্রতিদিন পর্যাপ্ত ঘুম পাওয়া জরুরি। এবং প্রতিদিন একটি ভাল পরিমাণ ঘুম আপনার শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় যা আমাদের বিভিন্ন রোগ থেকে রক্ষা করে এবং শরীরকে সতেজ রাখে।
৬/ নিজের ইচ্ছাকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিন
আপনি কি করতে পছন্দ করেন এবং কি করতে পছন্দ করেন না তার যত্ন নিতে হবে। আপনি যা পছন্দ করেন তা করুন এবং যা আপনার পছন্দ নয় তা থেকে বিরত থাকুন। নিজের ইচ্ছার বিরুদ্ধে কিছু করবেন না। আপনি কখনোই এতে সফল হতে পারবেন না, কিন্তু আপনি ব্যর্থতার কবলে আটকে যেতে পারেন। আপনার মন এবং আকাঙ্ক্ষার প্রাধান্য দিয়ে সমস্ত কাজ করুন; তাহলে, আপনি সফল হতে পারেন। আপনার ইচ্ছার বিরুদ্ধে সিদ্ধান্ত নিয়ে চাপ দেবেন না। এটি আপনার শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটাতে পারে। তাই আপনার মনের আকাঙ্ক্ষাকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে সকল কাজ করুন।
৭/ সবসময় হাসিখুশি থাকার চেষ্টা করুন
হাসি শরীর এবং স্বাস্থ্য ভালো রাখার জন্য একটি ভালো ব্যায়াম বা ওষুধ। আপনি যদি আপনার মন খুলে হাসতে পারেন তবে আপনার হৃদয় আরও ভাল হবে।
ড. জেমস গিল বলেছেন আমাদের সবসময় হাসিখুশি থাকার চেষ্টা করা উচিত। এটি শরীর এবং স্বাস্থ্যের জন্য ভাল হবে। এজন্য তিনি আমাদের সবাইকে আরো বেশি করে হাসার পরামর্শ দিয়েছেন।
# পরিশেষে কিছু পরামর্শ
শরীর ও স্বাস্থ্য ভালো রাখতে আমাদের উপরে দেওয়া নিয়ম মেনে চলা উচিত। আপনি যদি সঠিক ঘুম, ডায়েট, স্বাস্থ্যসেবা, ব্যায়াম রুটিন মেনে চলেন, তাহলে আপনি দীর্ঘদিন সুস্থ্য জীবনযাপন করতে পারবেন। এবং যেকোনো সমস্যার জন্য অভিজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ নিন।