প্রতিদিন আপেল খাওয়া এর ১০টি কার্যকর সুবিধাগুলো জানূন
আমাদের মধ্যে অনেকেই জানেন যে আপেল খাওয়া এর অনেক সুবিধা রয়েছে। এবং সে কারণেই আমরা মাঝে মধ্যে কিছু আপেল খেয়ে থাকি। আমরা যদি আপেল খাওয়া এর সমস্ত সুবিধাগুলো জানতাম তবে আমরা প্রতিদিন আমাদের খাবারের তালিকায় আপেল রাখতাম। আমরা প্রতিদিন আপেল খাচ্ছি না কারণ আমরা এর উপকারিতা জানি না, তাই আমরা আপেল খাওয়া এর প্রয়োজন বোধ করি না।
আমাদের ক্ষুধা মেটানোর জন্য আমরা প্রতিদিন কিছু না কিছু খেয়ে থাকি। আমরা হোটেল বা রেস্তোঁরাগুলিতে বিভিন্ন ধরণের খাবার খাই। তবে খাবারটি পরিষ্কার এবং স্বাস্থ্যকরভাবে প্রস্তুত করা হয়েছিল কিনা তা আমরা জানি না। এই জিনিসগুলি সঠিকভাবে যাচাই করার পরে আমাদের সেই হোটেল বা রেস্তোঁরাগুলিতে খাওয়া উচিত। আমাদের মনে রাখা উচিত যে এই খাবারগুলি খাওয়ার ফলে শরীরের পুষ্টি চাহিদা পূরণ হচ্ছে কিনা? নাকি শুধুই পেটের ক্ষুধা মেটাচ্ছে। সুস্থ থাকতে হলে আমাদের অবশ্যই স্বাস্থ্যকর খাবার খেতে হবে তাই এটিকে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া উচিত।
আশা করছি আমি কি বলেছি আপনারা তা বুঝতে পেরেছেন? আমরা যদি আমাদের শরীর এবং মনকে ভাল রাখতে চাই তবে আমাদের প্রতিদিন প্রচুর পুষ্টিকর খাবার খাওয়া দরকার। এদের মধ্যে অন্যতম স্বাস্থ্যকর এবং পুষ্টিকর কিছু খাবার হচ্ছে গরুর দুধ, পেয়ারা, আপেল ইত্যাদি। আপনি যদি প্রতিদিন ১ টি আপেল খান তবে সারাদিন আপনি থাকবেন সুস্থ্য ও সবল।
আপেল খাওয়া এর ১০ টি সুবিধা সম্পর্কে আলোচনা করা যাক
১/ শরীরের শক্তি বৃদ্ধি করে
আমরা প্রতিদিন বিভিন্ন ধরণের শারীরিক পরিশ্রম করি। ফলস্বরূপ, আমাদের দেহ থেকে প্রচুর শক্তি খরচ করছে। তাই প্রতিদিন আমাদের পুষ্টিকর খাবার খেয়ে শরীরের সেই চাহিদা পূরণ করা উচিত। আপেল শরীরের শক্তির চাহিদা মেটাতে সবচেয়ে কার্যকর উপায়। এই ফলগুলিতে ভিটামিন এ, সি, ই, ক্যালসিয়াম, পটাসিয়াম, সোডিয়াম, ফাইবার, আমিষ, চর্বি, শর্করা, ফসফরাস রয়েছে। শরীরের শক্তি এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে প্রতিদিন ১ টি আপেল খাওয়া আবশ্যক।
২/ পানিশূন্যতা দূর করতে
সুস্থ থাকার জন্য, একজন ব্যক্তির প্রতিদিন কমপক্ষে ৩ কেজি পানি পান করা উচিত। পানিশূন্যতা এবং তৃষ্ণা নিবারণে আপেল প্রচুর সাহায্য করে। তাই হাতে পানি না থাকলে আপেল খেতে পারেন। অতিরিক্ত পানিশুন্যতা শরীরের পিএইচ এর মাত্রা হ্রাস করে, তাই হজম প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্থ হয়। খাবার সঠিকভাবে হজম করতে না পারলে শরীরে বিভিন্ন ধরণের রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যেতে পারে। সুতরাং যেসব খাবারগুলিতে জল রয়েছে সেগুলি প্রচুর পরিমাণে খাওয়া উচিত।
৩/ ত্বক স্বাস্থ্যকর এবং ভাল রাখতে
চর্ম বিশেষজ্ঞের মতে, আপেল ত্বককে মসৃণ, নরম এবং ভাল রাখতে সহায়তা করে। ত্বকের উজ্জলতা বাড়িয়ে তুলতে এবং মসৃণ করতে আপেলের প্রচুর ভূমিকা রয়েছে।
নিয়মিত আপেল খেলে ত্বকের বিভিন্ন ধরনের সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। আমরা আমাদের ত্বককে ভাল, স্বাস্থ্যকর এবং সুন্দর রাখতে বিভিন্ন উপায় ব্যবহার করি। তবে সবচেয়ে ভাল উপায় হ’ল দিনে অন্তত ১ টি করে আপেল খাওয়া। এটি আপনার ত্বক এবং স্বাস্থ্য ভাল রাখতে বিশেষ ভূমিকা পালন করবে।
৪ / হজমশক্তি বাড়াতে সাহায্য করে
আপনি কি হজমের সমস্যা নিয়ে চিন্তিত আছেন? তাহলে আজ থেকেই প্রতিদিন ১ থেকে ২ টি আপেল খাওয়া শুরু করুন। আপনি দেখতে পাবেন যে কয়েক দিনের মধ্যেই আপনার হজমের সমস্যা কমতে থাকবে।
প্রতিদিন সকালে আপেল খেলে হজমশক্তি খুব দ্রুত বৃদ্ধি পায়। আর আমরা সবাই জানি খাবার সঠিকভাবে হজম করতে না পারলে আমরা অসুস্থ্য হয়ে পড়তে পারি। আপেলের বিভিন্ন ধরনের ভিটামিন হজমশক্তি বাড়ায়, আর আপনাকে স্বাস্থ্যবান ও শক্তিশালী রাখে এবং ক্ষুধা বাড়ায়। তাই প্রতিদিন আপেল খাওয়া এর অভ্যাস গড়ে তুলুন।
৫/ ক্যান্সার প্রতিরোধে আপেলের ভূমিকা
বিভিন্ন ধরণের ক্যান্সার আমাদের শরীরে বাসা বাঁধতে পারে। আপেলের মধ্যে আছে পেকটিন নামক উপকারী উপাদান যা আমাদের শরীরে ক্যান্সারকে বাসা বাঁধতে দেয়না। এছাড়াও বিভিন্ন পুষ্টিকর উপাদানের কারণে শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। আপেল মহিলাদের স্তন ক্যান্সার থেকে রক্ষা করতে পারে। আপেল মহিলাদের স্তন ক্যান্সার থেকে রক্ষা করার পাশাপাশি আরও বিভিন্ন ধরণের ক্যান্সার প্রতিরোধে সহায়তা করতে পারে। তাই ক্যান্সার প্রতিরোধে আপনি অন্যান্য ফলের পাশাপাশি দিনে ১ থেকে ২ টি আপেল খেতে পারেন।
৬/ পাকস্থলী ও লিভার সুস্থ্য রাখতে
বিশেষজ্ঞদের মোতে, আপেলে থাকা বিভিন্ন ধরণের ভিটামিন শরীর পাকস্থলী ও লিভার সুস্থ্য রাখতে অনেক ভূমিকা রাখে। আমরা সবাই জানি যে অপরিষ্কার খাবার খেলে পাকস্থলী ও লিভার অসুস্থ হয়ে যায়। তাই খাওয়ার আগে সবসময় ফল-ফলাদি পরিষ্কার পানি দিয়ে ভালোভাবে ধুয়ে নিন। আপনার যদি পাকস্থলী ও লিভার ভালো থাকে তবে আপনিও থাকবেন সুস্থ এবং শক্তিশালী। তাই আপনার পাকস্থলী ও লিভার সুস্থ রাখতে দিনে ১ থেকে ২ টি আপেল খেতে পারেন।
৭/ অতিরিক্ত ওজন কমাতে আপেলের ভূমিকা
অতিরিক্ত ওজন কমাতে আপেলের অনেক ভূমিকা রয়েছে। শরীরের অতিরিক্ত ওজন কমাতে আমরা বিভিন্ন ধরনের পদ্ধতি অনুসরণ করি। অতিরিক্ত ওজন কমাতে আমরা বিভিন্ন শারীরিক অনুশীলন এবং ডায়েট কন্ট্রোল করে থাকি। তবে অনেক সময় আমরা হতাশ হয়ে পড়ি কারণ আমরা এর থেকে ভাল ফলাফল পাই না। আমাদের মধ্যে অনেকেই জানেন না যে খাবার খেয়েও ওজন হ্রাস করা সম্ভব। আপেল এমন একটি খাবার যা আপনার অতিরিক্ত ওজন কমাতে সহায়তা করবে। শরীরের অতিরিক্ত ওজন হ্রাস করতে আপনি দিনে ১ থেকে ২ টি আপেল খেতে পারেন। পেটের ক্ষুধা মেটানোর পাশাপাশি আপনার শরীর সুস্থ ও শক্তিশালী হবে।
৮/ আপনার দাঁত শক্ত এবং পরিষ্কার রাখে
আমরা সবাই জানি যে দাঁত মানুষের মুখের সৌন্দর্য বজায় রাখে। দাঁত থাকতে আমরা অনেকেই দাঁতের মর্যাদা কি তা বুঝতে পারিনা। দাঁত মজবুত, শক্তিশালী এবং সাদা রাখতে আপেলের প্রচুর ভূমিকা রয়েছে। আমরা যখন আপেল চিবানো শুরু করি তখন দাঁতের কোনায় থাকা ক্ষতিকারক ব্যাকটেরিয়া বেরিয়ে আসে। আর এতেই দাঁত পরিষ্কার হয় এবং ক্ষয়ের সম্ভাবনা কমে যায়. তাই আপনি দাঁতকে সুন্দর এবং চকচকে রাখতে প্রতিদিন ১-২ টি আপেল খেতে পারেন। চেষ্টা করুন প্রতিদিন সকালে আপেল খাওয়া এর এতে ফলাফল খুব ভালো পাবেন।
৯/ হার্টকে সুস্থ্য রাখতে আপেলের ভূমিকা
আমরা সবাই জানি আমাদেরকে সুস্থ্য রাখতে হার্টের ভূমিকা সবার উপরে। হার্ট যদি হয়ে পড়ে অসুস্থ থামলে আপনি কখনোই সুস্থ্য থাকতে পারবেন না. হার্টকে সুস্থ রাখতে আপেলের ভূমিকা অপরিসীম। অনেকে হার্টকে সুস্থ রাখতে বিভিন্ন ধরণের খাবার খাওয়ার পরামর্শ দেন। তবে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের মতে, প্রতিদিন আপেল খাওয়া হার্টকে স্বাস্থ্যকর রাখার সবচেয়ে কার্যকর উপায়। আপনি নিশ্চয়ই বুঝতে পারছেন প্রতিদিন আপনার আপেল খাওয়া কেন জরুরী। আপনার হার্টকে এবং স্বাস্থ্য ভালো রাখতে প্রতিদিন ১ থেকে ২ টি করে আপেল খেতে পারেন।
১০/ যৌন ক্ষমতা বৃদ্ধিতে আপেলের ভূমিকা
আমরা সবাই জানি পুরুষ ও মহিলাদের সবচেয়ে বেশি চাহিদা থাকে শারীরিক মিলনের প্রতি। আর প্রতিদিন আপেল খেলে যৌন ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। তবে গবেষণায় দেখা গেছে যে মহিলাদের যৌন ক্ষমতা এবং আকর্ষণ বাড়াতে আপেল সবচেয়ে বেশি ভূমিকা রাখে। অ্যাপল পুরুষদের যৌন ক্ষমতা বাড়াতেও অনেক ভূমিকা রাখে। আপেল শরীরের যৌন ক্ষমতা এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে. তাই প্রতিদিন অন্তত ১ থেকে ২ টি করে আপেল খাওয়া উচিত।
পরিশেষে বলা যায়, আমরা যে কোনও বয়সে আপেল খেতে পারি, তবে বিশেষত অল্প বয়সী ছেলে-মেয়েদের আরও বেশি করে আপেল খাওয়া উচিত। এই ফলটি খেলে তাদের সুস্বাস্থ্য বজায় থাকবে পাশাপাশি মানসিক বিকাশও বাড়বে। তাই আপেল খাওয়া এর অভ্যাসটি সকল বয়সের মানুষের করা উচিত। তবে মনে রাখতে হবে আপেলটি যেনো ফরমালিন বা কেমিক্যাল মুক্ত হয়. ফরমালিন বা কেমিক্যালযুক্ত ফল-ফলাদি খেলে আপনি বিভিন্ন মরণব্যাধিতে আক্রান্ত হতে পারেন। তাই সতর্কতা অবলম্বন করে সকল খাবার খাবেন এতে সবাই থাকবেন সুস্থ্য ও সবল।
পরিশেষে বলা যায়, আমরা যে কোনও বয়সে আপেল খেতে পারি, তবে বিশেষত অল্প বয়সী ছেলে-মেয়েদের আরও বেশি করে আপেল খাওয়া উচিত। এই ফলটি খেলে তাদের সুস্বাস্থ্য বজায় থাকবে পাশাপাশি মানসিক বিকাশও বাড়বে। তাই আপেল খাওয়া এর অভ্যাসটি সকল বয়সের মানুষের করা উচিত। তবে মনে রাখতে হবে আপেলটি যেনো ফরমালিন বা কেমিক্যাল মুক্ত হয়. ফরমালিন বা কেমিক্যালযুক্ত ফল-ফলাদি খেলে আপনি বিভিন্ন মরণব্যাধিতে আক্রান্ত হতে পারেন। তাই সতর্কতা অবলম্বন করে সকল খাবার খাবেন এতে সবাই থাকবেন সুস্থ্য ও সবল।
আরও পড়ুন – সকালে খালি পেটে লেবু পানি এর উপকারিতা কিভাবে পাবেন