চেয়ারম্যান এর কাছে আবেদন বা দরখাস্ত লেখার নিয়ম জেনে নিন।

চেয়ারম্যান এর কাছে পত্র বা দরখাস্ত

চেয়ারম্যান এর কাছে আবেদন বা দরখাস্ত লেখার প্রয়োজনীয়তা?

দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষ অবধি সরকার এর বিভিন্ন সুযোগ, সুবিধা ও অভিযোগ পৌঁছানোর জন্য বিভিন্ন ধরনের ব্যবস্থা করে রেখেছে। তারমধ্যে আমাদের কাছের একজন হলো ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান। থানার বা উপজেলার জন্য এমপি, মেয়র, কাউন্সিল আরো বেশ কিছু পদের লোক থাকে। তেমনি ইউনিয়ন পর্যায়ে আছে চেয়ারম্যান। একজন চেয়ারম্যানের দ্বায়িত্ব তার অধীনে থাকা সকল মানুষের সেবা করা। এটা যেমন তার দ্বায়িত্ব তেমনি আপনার বা উক্ত এলাকার মানুষের দ্বায়িত্ব তার ব্যাক্তিগত অথবা সামাজিক যে কোন সমস্যা হলে সেটা চেয়ারম্যান কে জানানো। চেয়ারম্যানকে নিজের সমস্যার কথা জানানো বা এটি সমাধান এর সবচেয়ে কার্যকারি মাধ্যম হলো চেয়ারম্যান এর কাছে আবেদন বা দরখাস্ত লিখা।

চেয়ারম্যান এর কাছে আবেদন বা দরখাস্ত লেখার নিয়ম অনেকেই হয়তো জানে। কিন্তু যেহেতু সম্মানিত একজন ব্যাক্তির কাছে দরখাস্ত লিখতে হবে, তাই খুব সর্তক থাকা ভালো যাতে কোন ভূল না হয়। আবার অনেকে দরখাস্ত লেখার নিয়ম যানেন কিন্তু চিন্তায় থাকেন চেয়ারম্যান এর কাছে দেওয়া দরখাস্তের নিয়ম আলাদা কিনা। ইত্যাদি বিষয়ের কারণে অনেকেই চেয়ারম্যান এর কাছে আবেদন বা দরখাস্ত লেখার নিয়ম সম্পর্কে জানতে গুগলে অনুসন্ধান করেন।

আপনাদের সমস্যার সমাধান আজকের এই পোষ্টে পাবেন। এখানে খুব সুন্দর ভাবে ধাপের পরে ধাপ দিয়ে চেয়ারম্যানের কাছে দরখাস্ত লেখার নিয়ম দেখিয়ে দিবো। প্রতিটা ধাপ সময় নিয়ে পড়তে হবে।

চেয়ারম্যানের কাছে দরখাস্ত লেখার নিয়ম –

১) স্বাভাবিক ভাবেই বা অন্য সব দরখাস্তের মতো প্রথমে তারিখ দিয়ে শুরু করতে হবে। আপনি যে কোন কারণে বা যে কারো কাছে দরখাস্ত জমা দিলে প্রথমে কাগজের বাম সাইডে সব লেখার উপরে তারিখ লিখতে হবে। তারিখ লিখবেন  – দিন/মাস/বছর এই ফর্মেটে।  (নিচে নমুনা অনুসরণ করুন)

২) তারিখ লেখার পর বরাবর লিখতে হবে। এইটা তারিখ এর নিচেই লিখতে হবে। তারিখ এর নিচে বাম সাইডে। বরাবর লেখার মানে পরের দাপ ফলো করলে বুঝতে পারবে।

৩) বরাবর লেখার পর লিখতে হবে “চেয়ারম্যান”। চেয়ারম্যান শব্দটি হবে বরাবর লেখার পরের লাইনে। এবং বরাবর শব্দের শেষ অক্ষর (র) এর নিচে চেয়ারম্যান লিখতে হবে। (নিচে নমুনা অনুসরণ করুন)

৪) চেয়ারম্যান লেখার পর চেয়ারম্যান শব্দের নিচে আপনার এলাকার ইউনিয়ন পরিষদ এর নাম লিখতে পারেন। যেমনঃ ” ক” ইউনিয়ন পরিষদ। ইউনিয়ন পরিষদ ছাড়া যদি চেয়ারম্যান এর অন্য কোন কার্যালয় থাকে সেটা লেখতে পারেন।

৫)  এখন আপনার কাজ হলো থানা ও জেলার নাম লেখা৷ ইউনিয়ন পরিষদ লেখার পর পরের লাইনে লিখবেন আপনার থানা ও জেলার নাম।

এখানে ১-৫ পর্যন্ত দেখানো ধাপ গুলো হলো দরখাস্তের প্রথম ধাপ। পরের দাপ গুলোতে দেখাবো কি ভাবে আপনার সমস্যার কথা দরখাস্তে জানাবেন। সুন্দর করে সবগুলো ধাপ ফলো করুন।

৬) থানা ও জেলা লেখার পর একটু ফাঁকা জায়গা রেখে দিবেন। তারপর বিষয়ঃ লিখে আপনি কি জন্য সাহায্য চান সেটা ছোট করে লিখবেন।

৭) বিষয় লেখার পর আবার একটু ফাকা রেখে লিখবেন জনাব। জনাব লেখার পর আপনার মূল কথা লিখতে হবে।

৮) দরখাস্তের বডি বা মূল কথার অংকশটা আপনি বিনীত নিবেদন এই যে দিয়ে শুরু করতে পারেন। এবং তারপর আপনি অথবা আপনার এলাকার তথ্য দিবে৷ এবং আপনার সমস্যা বলবেন। এই গুলো মাত্র ৪-৫ লাইনে শেষ করবেন।

৯) এখন আপনি আপনার সব সমস্যা লেখার পর লেখবেন “অতএব, বিনীত নিবেদন এই যে আমার সমস্যা বিবেচনা করে আমাকে যথাসম্ভব সাহায্য প্রধান করবেন।

১০) দুই লাইন পরে ডান পাশে আপনার স্বাক্ষর দিতে  পারেন।

চেয়ারম্যান এর কাছে আবেদন বা দরখাস্ত লেখার নিয়ম অনুসারে এখানের দশটা ধাপ সাজানো হয়েছে। চেয়ারম্যানের কাছে দরখাস্ত লেখার জন্য এই নিয়মের বাইরে আপনাদের আর কোন নিয়মে দরখাস্ত লিখতে হবে না। শুধু চেয়ারম্যানের কাছে না যেকোনো ধরনের দরখাস্তের নিয়মটা প্রায় হুবহু একই রকম হয়ে থাকে।  আপনাদের সুবিধার্থে একটি ছবি সংযুক্ত করা হলো যে ছবিটিতে কিভাবে চেয়ারম্যানের কাছে দরখাস্ত লিখতে হয় সেটা খুব স্পষ্টভাবে এবং এখানে থাকা ধাপগুলো অনুসরণ করে তৈরি করা হয়েছে।

চেয়ারম্যান এর কাছে আবেদন বা দরখাস্ত লেখার নিয়ম ছবিসহঃ

তারিখ : ১০/০২/২০..

বরাবর,
মাননীয় চেয়ারম্যান,
“খ” ইউনিয়ন পরিষদ,
থানার নাম, জেলার নাম

বিষয় : আর্থিক সহযোগিতার জন্য আবেদন।

জনাব,

আমি [আপনার নাম লিখুন], এবং [আপনার নিজের গ্রামের নাম লিখুন] গ্রামের একজন [আপনার শ্রেণী বা নিজের পেশা লিখুন]। আমার নিজের পরিবারের আর্থিক অবস্থা এখন খুবই খারাপ বা খুবই দরিদ্র। আমার বাবা বলতে গেলে একজন দিনমজুর এবং মা একজন গৃহিণী। আমাদের পরিবারের মধ্যে আমি ছাড়াও আরও [আপনার নিজের ভাই বা বোনের সংখ্যা লিখুন] জন ভাই বা বোন রয়েছে। আর আমরা সবাই এখন লেখাপড়া করছি।

আমাদের বাবা এখন খুবই অসুস্থ হওয়ায় তিনি গত কয়েক মাস যাবত কোনধরনের কাজ করতে পারছেন না। এই সমস্যার ফলে আমাদের পরিবারের এখন বর্তমান আর্থিক অবস্থা আরও অনেক খারাপ হয়ে গেছে। আর তাই এখন আমরা আমাদের নিজেদের পড়াশোনার খরচ চালাতে অক্ষম।

তাই এই কঠিন অবস্থায়, আমি আপনার নিকট বিনয়ের সাথে আর্থিক সহযোগিতার জন্য বিনীত আবেদন জানাচ্ছি। আপনার এই সামান্য সাহায্যের কারনে আমরা আমাদের পড়াশোনা চালিয়ে যেতে সক্ষম হবো এবং অদূর ভবিষ্যতে আমি একজন ভালো মনের মানুষ হতে চেষ্টা করতে পারবো।

অতএব, বিনীত নিবেদন এই যে আমার সমস্যা বিবেচনা করে আমাকে যথাসম্ভব সাহায্য প্রধান করবেন। আমি বা আমরা সহায়তা পার্থী।

আবেদনকারী
নাম :
গ্রামের নাম :
নাম্বার :
———–
    স্বাক্ষর
আমাদের মাঝে অনেকে আছে যারা কিনা অনেক সময় নিয়ে পড়তে পছন্দ করে না অথবা বিভিন্ন সমস্যার কারণে তারা অনেক সময় দিয়ে পড়তে পারেনা এবং ধাপগুলো অনুসরণ করতে পারে না। তাদের কথা চিন্তা করে একটি ছবি দেওয়া হলো। আপনারা এই ছবি অনুসরণ করে দরখাস্ত লিখে সেটা চেয়ারম্যানের কাছে জমা দিতে পারেন এবং আপনাদের সমস্যাগুলো চেয়ারম্যানের কাছে বলতে পারেন।